বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৩ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: আসামের করিমগঞ্জে জঙ্গি সন্দেহে আটক পাঁচ বাংলাদেশি উগ্রবাদে জড়িত নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। সিলেটের জকিগঞ্জ ও কানাইঘাটের বাসিন্দা ওই পাঁচজন কম টাকায় সৌদি আরব যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুর রহমান। এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখেছি, ওরা এলাকার গরিব কৃষি শ্রমিক। তারা লোভে পড়ে হয়তো ভারতে গেছে, কিন্তু জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য আমরা পাইনি।’ শফিকুর রহমান বলেন, ‘যেটুকু জেনেছি সৌদি যাওয়ার জন্য দালালের খপ্পরে পড়ে ওপারে গিয়েছে। ধরা পড়ার পর আনন্দবাজার ওদের জঙ্গি বানিয়ে দিয়েছে।’
এলাকা সূত্রে জানা গেছে, দালালের খপ্পরে পড়ে কম টাকায় সৌদিআরবে যাওয়ার জন্যই ওই পাঁচ যুবক ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। সে লক্ষ্যে ভারতের পাসপোর্ট সংগ্রহের চেষ্টাও করেছিলেন তারা।’ আটক যুবকরা হলেন জকিগঞ্জ উপজেলার কালাকুটার সাব্বির আহমদ, শাহজাহানপুর গ্রামের সুমন আহমদ, আনারসা গ্রামের দিলওয়ার ওরফে জামাল, কানাইঘাটের সাতবাক ইউনিয়নের ছাপনগর গ্রামের শাহিদ আহমদ এবং জকিগঞ্জ উপজেলার নিয়াগুল গ্রামের আবদুল আহাদ। এদের মধ্যে আহাদ মারা গেছেন এবং তার মরদেহও হস্তান্তর করেছে ভারত।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে স্থানীয় পুলিশ জানায়, এই পাঁচজন বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতের করিমগঞ্জে পৌঁছান। এর মধ্যে আবদুল আহাদ নামের একজন হার্ট অ্যাটাককে মারা যান। তার মরদেহ ফেলতে গিয়েই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে বাকি চারজন। আসাম পুলিশ ওই চার যুবককে সন্দেহভাজন জঙ্গি বলে ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। মঙ্গলবার করিমগঞ্জের নিলাম বাজার এলাকা থেকে এদের আটকের পর প্রথম থেকেই তাদের জঙ্গি হিসেবে সন্দেহ করছে রাজ্য পুলিশ। সেইসঙ্গে সেখানকার স্থানীয় দৈনিকে আটকরা আইএস-এর সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে বলে জানিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রকাশিত ছবি দেখে গ্রামের লোকজন ওদের আটক হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হন স্বজনরা।
ভারতে মারা যাওয়া আবদুল আহাদের স্বজনরা পুলিশকে জানিয়েছে, তিনি বাড়ির কাউকে না বলে ভারতে যান। পরদিন ফোন করে জানান, সৌদি আরবে যেতে তিনি ভারতে আছেন। শাহিদ আহমদ গত ১৫ আগস্ট ভারতে যান বলে জানিয়েছেন কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। কানাইঘাট পয়েন্টে স্টার পয়েন্ট নামের একটি পোশাকের দোকান রয়েছে শাহিদের। তার দুই ভাই সৌদিআরবে আছেন।
পুলিশের কাছে স্বজনরা জানান, করিমগঞ্জের কোনো এক দালাল চক্রের কাছে তারা জানতে পারেন সেখানে ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহ করলেই কম টাকায় সৌদি যেতে পারবে। এরপর তারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। করিমগঞ্জের পুলিশ সুপার পি আর কর সেদেশের গণমাধ্যমকে জানান, আটকদের কাছ থেকে একটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের গতিবিধি সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য পাওয়া যাবে বলে ধারণা করছি।’
জকিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক এ এইচ মাহমুদ জানিয়েছেন, এই পাঁচ বাংলাদেশি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এবং তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যক্রমের কোনো তথ্য নেই এলাকাবাসীর কাছে। ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর অনুযায়ী, গত ১৪ আগস্ট পাঁচ সন্দেহভাজন বাংলাদেশি যুবক মেঘালয়া সীমান্ত পাড়ি দেয়। পরে তারা ভারতের কালীগঞ্জ এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে আশ্রয় নেয়।